দেশে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তি’র রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই! তাদের চিরতরে নির্মূল করার শপথ করেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি সকাল ৯ টায় মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং সকাল সাড়ে ৯ টায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে এবং সকাল ১০ টায় রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু’র নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন করার পর সংগঠনের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ বলেন, বাঙ্গালি জাতির ইতিহাসে অত্যান্ত বেদনাদায়ক দিন ১৪ ডিসেম্বর। এই দিনে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হারিয়েছে জাতি। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আমরা ভুলবো না।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় যখন নিশ্চিত, ঠিক তখনি পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বরেণ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের রাতের আঁধারে চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে এনে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের পর ঢাকার মিরপুর, রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বুদ্ধিজীবীদের লাশ ফেলে রেখে যায়।
তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পরপরই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিকট আত্মীয়রা মিরপুর ও রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে তাদের গলিত ও ক্ষত বিক্ষত লাশ খুঁজে পায়। বুদ্ধিজীবীদের লাশে ছিল বর্বোরচিত নির্যাতনের ক্ষত চিহ্ন। চোখ, হাত-পা ছিল বাঁধা। কারো কারো শরীরে ছিল একাধিক গুলি। অনেককে হত্যা করা হয়েছিল ধারালো অস্ত্র দিয়ে। লাশের ক্ষত চিহ্নের কারণে অনেকেই প্রিয়জনের মৃতদেহ শনাক্ত করতে পারেননি।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭২ সালে জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সঙ্কলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিক নিউজ ম্যাগাজিন ‘নিউজ উইক’-এর সাংবাদিক নিকোলাস টমালিনের লেখা থেকে জানা গেছে, শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা মোট ১ হাজার ৭০ জন।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু বলেন, স্বাধীনতার সূর্য উদিত হওয়ার পূর্ব মুহুর্তে পাকস্তানী হানাদার বাহিনী তাদের এদেশীয় দোসর রাজাকার আলবদর আল শামস মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রকাশ্য সহায়তায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে মিরপুর ও রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে রেখে যায়।
তিনি বলেন, তারা জাতিকে মেধাশূন্য করার জন্য পরিকল্পিত ভাবে এই বর্বোরচিত ইতিহাসের জগন্যতম হত্যাকান্ড সংঘটিত করে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহীদ ২ লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা।মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থাপিত সকল প্রশ্ন ১৯৭১ সালে সমাধান হয়েছে! সাম্প্রদায়িক অপশক্তি জননেত্রী শেখ হাসিনার ধারাবাহিক উন্নয়ন অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্থ করতে নতুন ভাবে পুরাতন মিমাংসিত প্রশ্নের অবতারনা করে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা দেশ ও জাতির শত্রু। তাদের প্রতিরোধ করতে স্বেচ্ছাসেবক লীগ সদাসর্বদা জাগ্রত।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশকে যারা মানে না তাদের এদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে বাংলার মাটি থেকে চিরতরে উৎখাত করাই আমাদের শপথ।এসময় স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।