স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, যেকোনো ওষুধে সাইড ইফেক্ট থাকতে পারে। আমরা একটি ওষুধ গ্রহণ করলেও সেটার গায়ে লেখা থাকে কী কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। আবার নাও হতে পারে। বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিনে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনেও হয়েছে। ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেন না হয় সেদিকে আমাদের গুরুত্ব থাকবে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বুলেটিন বাংলাদেশে করোনা মোকাবিলার দলিল। যেখানে গত নয় মাসের করোনা মোকাবিলার তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। কোভিড বারে বারে আসবে না। এই ইতিহাস তুলে ধরা দরকার। আগামী প্রজন্ম শিক্ষা নিতে পারবে, কীভাবে একটা মহামারি মোকাবিলা করা যায়। আমরা বুঝতে পারব, কে আমাদের বন্ধু, কে আমাদের শত্রু।
এর আগে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউ’র নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘মিট দা রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার ভ্যাকসিন দেওয়ার সামগ্রিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। টিকা বিতরণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন অনুসরণ করা হবে। প্রথমে ফ্রন্ট লাইনার চিকিৎসক-নার্সরা টিকা পাবেন। এ ছাড়া বয়স্ক ও গণমাধ্যমকর্মীরা অগ্রাধিকার পাবেন। একই সঙ্গে ডিআরইউ‘র সকল সদস্যরাও ভ্যাকসিন পাবেন।
আগামী ২৫ জানুয়ারি দেশে টিকা আসতে পারে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে প্রথম দফায় অক্সফোর্ড করোনা ভ্যাকসিনের ৫০ হাজার ডোজ দেশে আসবে। এ অবস্থায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য ঢাকায় তিনশ’র মতো টিকাদান কেন্দ্র এবং ৪২ হাজার কর্মীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। টিকা সংরক্ষণে ইউনিসেফের মাধ্যমে ফ্রিজ আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য বুলেটিন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, আজ যে বুলেটিন তৈরি করা হয়েছে এটা আরও আপডেট করা যেত। করোনাভাইরাস নিয়ে প্রতিনিয়ত তথ্য আপডেট হচ্ছে। কিন্তু ডিসেম্বর পর্যন্ত অনেক তথ্য ছিল। যা এই বুলেটিনে সংযুক্ত করা হয়নি। গ্যাভি কভেক্সের সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছিলেন জুমে। ৩ মিনিট প্রধানমন্ত্রী অংশগ্রহণ করেছিলেন জুলাই-আগস্ট মাসে। সেই তথ্য এখানে আসেনি। পরবর্তীতে এগুলোকে পুনরায় রিভাইস করে বুলেটিন প্রকাশের দাবি জানান।
স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) সভাপতি ও কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সলান বলেন, ফাইজারের ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে গণমাধ্যমের প্রকাশিত খবর ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক আলোচনার কারণে মানুষের মধ্যে একটি বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। এর অবসান ঘটাতে গণমাধ্যমকর্মীরা ভূমিকা রাখতে পারেন। যেভাবে তারা করোনার ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টি করেছিলেন। তাহলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য বিভাগ এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আলী নূর, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান প্রমুখ।